শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা
ফরিদ ছিফাতুল্লাহ’র একগুচ্ছ কবিতা
ফরিদ ছিফাতুল্লাহ’র একগুচ্ছ কবিতা
যৌনতা এক বীরের গল্প –
নিচু মাথা তার যৌনতায় অসফল।
আয়ুধ উত্তোলনে অক্ষম এক অপুরুষ।
পৌরুষ চিরকাল উত্থাপনের ব্যাপার বীরের বেশে
ঘোড় সওয়ার টগবগ টগবগ রাজ ও গোপন মেঠোপথে।
বিপরীত পতাকা ছিন্নভিন্ন করে মৌনতা হত্যার শাণিত আক্রমণ।
ন্যায়যুদ্ধে শামিল মার্সেনারি –
ইশারায় নাচের এক পুত্তুলিকার দেহাবসান।
যৌনতা এক বীরের গল্প–
ত্রাসের অনুপ্রাসে ফ্যাসিজম বালুঘরের নিচে ছয় মাত্রার রিখটার।
ওহ! আরেকটা কথা–
তীব্র যৌনতা ছাড়া লাতিন আমেরিকায় কখনো জন্মায় না চে গেভারা।
নৈঃসঙ্গ
পৃথিবী কোটি কোটি বছর শুধু উদ্ভিদময় ছিলো।
সাগরে ঢেউ ছিলো।
ঢেউয়ে গাছপালা ভেঙে পড়ত।
একের পর এক।
দিনের পর দিন।
কিন্তু দেখার কেউ ছিলো না।
সেই দর্শকহীন দৃশ্য –
দীর্ঘ ~ দীর্ঘ ~ দিনের দৃশ্য
নীরবে ঘটে চলেছিলো কোটি কোটি বছর ধরে।
আকাশে গোল থালার মতো উজ্জ্বল চাঁদ উঠতো।
ভোরে শিশির পড়তো।
বৃষ্টি হতো।
হাওয়া বইতো।
শুধু আহা শব্দটি ছিলো না।
ভোরকন্যা
কালো চাদর খুলে ফেলে শীতল শুভ্র পরিচ্ছদে
আবির্ভূত দেহে কপালে লাল টিপ– ভোরকন্যা।
যত লাল এযাবৎ বিপ্লবের দোহাই বৃক্ষসম
মানুষের অলিন্দ থেকে উৎসারিত বহুমাত্রিক
শিল্পকলার লাইভ প্রদর্শনী– রঙ ও শব্দ,
রেখা ও বাক্যের বিলাপ
পৌঁছাতে থাকবে গ্রাহক স্টেশনগুলোতে।
ধ্বনি প্রতিধ্বনিতে মুখর হবে অতিকায় কিন্তু –
সবগুলো অথবা খেলবে নিজেদের সুখে।
আলো গিলে খেতে আবার নামবে
কালো অবতার– ততক্ষণে
শিউলি ফুলে আঁচল ভরিয়ে দেবে
ফুটফুটে ভোর– শৈশবহীন দ্রৌপদী।
ফরিদ ছিফাতুল্লাহ। জন্ম ২১ মে, ১৯৭৬, রংপুর জেলায়। বাবা মুহম্মদ ছিফাতুল্লাহ। মা সালেহা বেগম। জাতীয় বিমানসংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগে কর্মরত। পড়াশুনা– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে এক বছর লেখাপড়া। ১৯৮৬ সালে স্কুলছাত্র থাকাবস্থায় রংপুরের স্থানীয় দৈনিক দাবানলে কবিতা প্রকাশিত হয়েছিলো। সেটাই প্রথম লেখা। এরপর দীর্ঘ বিরতি । তারপর ২০১৪ সাল থেকে পত্রিকায় কলাম লেখা দিয়ে লেখালিখিতে ফেরা। কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক বাঁকখালীর সাহিত্যপাতা সম্পাদনা। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বদেশে একসময় নিয়মিত কলাম লিখেছেন। এছাড়া জাতীয় ইংরেজি দৈনিক অবজারভার, ডেইলি সান, বাংলাদেশ টুডে ইত্যাদিতে সাম্প্রতিক বিষয়ে কলাম লিখেছেন। ২০১৮ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘রোদ বুনি ছায়াপথে‘ প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালে কবিতাগ্রন্থ ‘বিষাদের সঞ্চয়ী হিসাব‘ প্রকাশিত হয় পরিবার প্রকাশনী থেকে। বেশকিছু মননশীল প্রবন্ধ ও বই–আলোচনা ছাপা হয়েছে মুদ্রিত ও আন্তর্জালিক সাময়িক পত্রে। বেশ কিছু স্মারকগ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন।