You are currently viewing শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা

মোহাম্মদ হোসাইন এর
একগুচ্ছ কবতিা

মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচ্ছ কবিতা

 

কদমের চারা

 

 

চুল সাদা হয়ে গেলে মানুষ বিশ্বাস করে না

 

সময় পাল্টেছে

 

একটা তুরপুন এসে বুকে লাগলে মানুষ চিৎকার করে , অথচ, একজন বনপোড়া গৃহী আজীবন চাঁদ চটকালো, গলগল ঝেড়ে দিয়ে গেল কত না রক্তের, ছাইয়ের অগ্নি, বীজমন্ত্র

 

সাদা ঘোড়ার চিঁহি আমাকে তাই চিরদিন প্রস্তুতির কথা বলে, বিদ্রোহী গন্ধমের কথা বলে

 

একটা কল্লোলিত ভোর প্রতিদিন চোখে সুরমা পরিয়ে যায়, নিখিল থেকে আনে বন্দনার অমেয় গীত, আমি তবু কেন যে পরমার্থ খুঁজি…!

 

সোনালি সফর থমকে গেলে স্থানু হয়ে বসে থাকে প্রেম, অথচ, আমাদের চারপাশে কত অপ্রেম ঝুলে থাকে, তথাপিও, নাঙ্গা তলোয়ার ঝলসে ওঠে না

 

আমাদের সলাজ বাসর সাদা চুল ভালবাসে না

কোকিলের গান তাই বসন্তের আগেই ফিরে যায়

 

নদীতটে অপরূপ মায়া ছড়ানো

মাঝির বৈঠা কোনো দিন খুঁজে নি সে কাব্যের ঢং

 

দুকূল ছাপিয়ে বয়ে গেল কত বিভ্রমের হাওয়া

সাদা মেঘ সাদা চুলের উপমা নিল না

 

তবু, বেঁচে থাকি

তবু, কদমের চারা পুঁতে রেখে দিই বুকে

 

নীরলে

 

ডালপালা

 

 

বেজায় বেড়ে যাচ্ছে ডালপালা

 

ছেটে দাও, ছেটে দাও

 

আলো ঢেকে দিচ্ছে, ছায়া ঢেকে দিচ্ছে

বেজায় বেড়ে যাচ্ছে ডালপালা

 

ছেটে দাও, ছেটে দাও

 

যা কিছু অনাহুত, যা কিছু অকিঞ্চন

তাকে ছেটে দেওয়া ভাল

 

মদ মাৎসর্য দুর্বলতা আনে

তখন ঘর যেন ঘর, হাওয়াহীন

 

অবেলায় তাল কেটে যায় ঘু ঘু ডাক

 

রাঙা হাতপাখা ফুলবউ

শ্রুতি সৌন্দর্য বেশ আছে…!

 

বেজায় বেড়ে যাচ্ছে ডালপালা

তাকে ছেটে দাও, ছেটে দাও

 

মহৎ কাননগুলো মগ্নতা আনুক

সুরভিত হোক স্বপ্নের পাঠশালা

 

তাকে জল দাও, জল দাও

 

 

বেশ বেশ

 

বেশ বেশ। আনন্দ আনন্দ!

 

আনন্দ আনন্দ, জনতারা জনতারা

আমাদের জনতারা বেশ বেশ, হাসাহাসি, রাশি রাশি

 

আমাদের ঘুম নেই

রাতভর দিনভর ঝমঝম ঝমঝম, ঝিকঝিক ঝিকঝিক

আমাদের চোখ নেই, দেয়ালের চোখ দিয়ে চোখ দিয়ে

আমাদের কান নেই, চিলের কানে চিলের কানে

 

বেশ বেশ। হাততালি হাততালি! হাহ হাহাহ হা

 

আমাদের মুরগিগুলো সেয়ানা সেয়ানা

ডিম পারে না

ঘোড়াগুলো তা দেয় তা দেয় ডিম দেয়

ডিম দেয়ডিম দেয় না…! 

 

আমাদের মশা মাছি, গরু গাধা হাহ হাহাহ হা

গান গায় তেলে ভাজা, তেলে ভাজা

শংসয়শংসাঘিয়ে ভাজা ঘিয়ে ভাজা

বেশ বেশ! আনন্দ আনন্দ!!

 

পৃথিবীতে রোদ নেই রোদ নেই, রাগ নেই জনতারা জনতারা

 

হাততালি হাততালি! হাহ হাহাহ হা..

কবি পরিচিতি
কবি মোহাম্মদ হোসাইনএর জন্ম ১৯৬৫ সালের অক্টোবর, সুনামগঞ্জে। লেখালেখি শুরু ছোটবেলাতেই। নানা পত্রিকায়, নানা মাধ্যমে চল্লিশ বছর ধরে নিরন্তর যাত্রা। কবিতাই তাঁর ধ্যান, নিমগ্ন আরাধনা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে সম্মানসহ স্নাতক স্নাতকোত্তর শেষে পেশা হিসেবে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ

ভালোবাসা নির্বাসনে গেছে (১৯৯৫)
মেঘগুলো পাখিগুলো (২০০১)
অরণ্যে যাবো অস্তিত্বে পাপ (২০০৩)
পালকে প্রসন্ন প্রগতির চাকা (২০০৪)
ভেতরে উদগম ভেতরে বৃষ্টিপাত (২০০৬)
মেঘের মগ্নতায় রেশমি অন্ধকার (২০০৯)
বৃষ্টির গান মায়াবাস্তবতা (২০১২)
রূপপ্রকৃতির বিনম্র চিঠি (২০১৩)
নৈঃশব্দ্যের এস্রাজ (২০১৪)
অন্তিম জাদুর ঘূর্ণন (২০১৫)
বিভাজিত মানুষের মুখ (২০১৫)
অনূদিত রোদের রেহেল (২০১৫)
ভুল হচ্ছে কোথাও ভুল হচ্ছে (২০১৭)
তুমুল বেজে ওঠে অন্ধকার (২০১৯)
হায়ারোগ্লিফিক্স (২০২০)

চেনা গন্ধের মেটাফোর (২০২১)

ঈশ্বরের ছায়াচিত্র (২০২২)

ইমেইল
mhossainsyl65@gmail.com 

 

ফেসবুক
Mohammed Hossain

মোহাম্মদ হোসাইন
কবি

Leave a Reply