You are currently viewing শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। শুভদীপ মাইতি’র গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। শুভদীপ মাইতি’র গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা

শুভদীপ মাইতি’র গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা-২০২৪

 

শুভদীপ মাইতি’র গুচ্ছ কবিতা

 

যা কিছু বলতে পারিনি তোমাকে

                                    

 

তোমাকে বলিনি আমি ভালো নেই

তোমাকে বলিনি বালিশের ভিজে যাওয়া পর্ব

আরও যা যা বলতে পারিনি তোমাকে

তার সবটুকু নিয়ে হৃৎপিণ্ড কেটে কেটে

যত্নে সাজানো আছে। ভাঙা টুকরো টুকরো কোলাজ

 

গোয়ালাপুকুরের মাটি ছুঁয়ে যে রাস্তাটি চলে গেল চৌখালি ছাড়িয়ে খামটি, গোপিনাথপুর

কেলেঘাই নদীর মতো উপচে পড়ছে। তছনছ হচ্ছে পুনরায়

 

ফিরে আসা কি সহজ কিছু!

চাইলেই কি ফিরে আসা যায়!

 

সিঁড়ি নেমে আসার পথ

সিঁড়ি উপরে ওঠার অন্যতম উপায়

আমি তো আজীবন এই মাটিতেই থাকতে চেয়েছি ছুঁয়ে

 

আমি যখন ঝুঁকি নিয়ে পেরোতে চাইছি রেল লাইন

দক্ষিণের একটি দূরপাল্লার ট্রেন আমাকে চড় মেরে চলে গেল

 

 

 

শেকড়ে, গোপন সেতারে

                          

 

দুরূহ রাত্রির অন্ধকারে যত্নে সাজানো শব্দ দিয়ে আঁকা টুকরো টুকরো ছবি

মধ্যিখানে তুমি। ছুঁয়ে আছো হৃদয়ের ওম। জগত্তারিণী অন্তরে।

এমন বর্ষার রাতে যাবতীয় অভিমানে টুনি লাইটের মতো জ্বলে ওঠে

আজন্ম উপসম, মায়াময় জোনাকির আলো।

 

এখানে প্রতিরাতে হসপিটালের গন্ধে ভাসে প্রার্থনা উপাচার। ফিরে আসার প্রতীক্ষা

এই ঝাউ গাছের সারি মায় উপকূল বরাবর হেঁটে গেছেন অশ্বপুরুষ।

কীর্তন ছুঁয়ে থাকে বাতাসের সুরে। নাভি থেকে ঝরে পড়ে ব্যথা

 

আমাদের বয়স বাড়ার দিনে, দেওয়ালের ক্ষতে বেজে ওঠে গোপন সেতার।

বাবা, মা একটু একটু করে বেঁকে যান শরীরে শরীরে। এই লালনে হলুদ বর্ণের আলো;

আমাকে বেঁধে রাখে শেকড়ে শেকড়ে। জন্মান্তরে মুছে যায় দাগ

 

হরিৎশস্যের মতো কতকাল কৃষকের পূর্ব পুরুষের চারিয়ে যাওয়া শেকড়ে

দু’বেলা, দু’মুঠো খিদে লেগে আছে

 

 

অসুখ প্রতিমা

 

থার্মোমিটারে পারদের ওপারে যখন তোমার জ্বর ফুটে উঠছে, তুলা রাশির জাতক

এপারে ভেতরে ভেতরে পুড়ে যাচ্ছি আমি ও মেহগনি ছায়া

অদ্ভুত মায়া নিয়ে ভেসে যাচ্ছে ভাঙা মুখেদের কোলাজ। প্রতিমার মুখ ও ম্যারাপ

কচুরিপানার নিচে মাছেদের মৌন নগর। ঘোলাজলে লুকোনো থাকে কাঁটা

 

ধান রঙের রোদে নবপল্লবে উপশম নেমে আসে ক্ষতে। মাটির উনুনে অগ্নি দেবতা

আমি চিকনি শাকের ক্ষেতে খুঁজে পাই তোমার চলে যাওয়ার দাগ ও বাতিল সেফটিপিন

পিছুটান ভেঙে ভেঙে যথারীতি ফিরে আসি শরীরে, ছায়ায়, গোলাপের জলে

 

উপকূলবর্তী আমাদের যাপন। ধূসর কাচ রঙের। চওড়া বাইফোকাল

ঢেউ নেমে গেলে লাল কাঁকড়ার শিল্পকলায় আমি খুঁজে পাচ্ছি

হিমালয় কন্যার কাতিল তাকিয়ে থাকা হরিদ্রাভ মুখ



শুভদীপ মাইতি

গ্রাম: সেরপুর তেলেঙ্গা বাড়

( কাঁথি সারদা আশ্রমের কাছে )

ডাকঘর ও থানা : কাঁথি

জেলা : পূর্ব মেদিনীপুর

সূচক : ৭২১৪০১, পশ্চিমবঙ্গ

 

ভারত।

শুভদীপ মাইতি
কবি

Leave a Reply