শব্দকুঞ্জ কাশবন সংখ্যা
শিশির আজম এর একগুচ্ছ কবিতা
শিশির আজম এর একগুচ্ছ কবিতা
হেমন্তে এক পথিক
… সত্যিই সে পৃথিবীকে অনুভব করতে শিখেছে –তার কপালের ঘাম রোদের ভিতর
দেখে আসে আরেক জীবন, ঘুমের পশমে জড়াজড়ি…
বাতাসের চোখ নিশ্চয় এড়ায়নি, তার কপালের ঘাম
যতক্ষণ না ঠান্ডা হয়েছে, রোদের ভিতর হারিয়ে এসেছে ভঙ্গুর অভ্রের কণা।
গত বছরেও এরকম আওয়াজে সে আমল দেয়নি। সিল্কের সুতোয় বৃত্তাকার কড়া রোদ
কোন জানালা কি ছিল? তার প্রতিদিনকার কোলাহল মসৃণ দেয়ালে
উচ্চতা হারিয়ে নির্ঝঞ্ঝাট গোধুলিতে সমন্বিত —
জোনাক পোকার খুব কাছে অন্য উপকূল ছিল উদ্ভাসিত, যেন
তোমার শীতল ছায়ারাশি ভ্রান্তিতে তলায়।
রাতের গভীর শব্দ উত্থিত হয়েছে প্রাণিজগতের হৃৎকেন্দ্র হতে। পৃথিবীর উৎসগাথা —
সবকিছুই কি স্বচ্ছ!
ঘুমন্ত স্বপ্নেরা আমাদের দরকারী সব কাজে আদৌ বিঘ্ন ঘটায়নি…
আলোর দ্রবণে মুখ দেখাদেখি। বধিরতা আর কতোটা শীতল?
পাখির যে ডানা আকাশ ছাড়িয়ে মহাশূন্যে ধাবিত হয়েছে, তার ঝাঁপটানি লাগে বুকে।
সে খুঁজে পেয়েছে শিশিরের দাগ — কুচি কুচি নক্ষত্রের নির্জনতা —
সাপের অদৃশ্য তাপ তাকে বাঁচাবে রাতের অনুষ্ঠানের হুল্লোড় থেকে।
তাঁতঘর আঁধারে জ্বলছে।
ঐ সাইকেল বুঝি হয়ে উঠবে বিপজ্জনক? আর কুয়াশায় মোরগের গলা নীল থেকে লাল?
ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ হেলে পড়ছে, শিশিরের ভার…
ব্ল্যাক ইউনিভার্স
লোকজন আমার সম্পর্কে যা জানে
তার কিছুই প্রায় আমি জানিনে
আবর্জনা হতে জীবনকে পরিশুদ্ধ রাখতে
একদা আমি যে সন্ন্যাসব্রত নিয়েছিলাম
ঠিক নিয়েছিলাম কি না
আর এখন যে কবিতাটবিতা লিখি ছবি আঁকি
বারে যাই
এমন কি মাঝরাত্তিরে
যখন রাস্তায় পুলিশ আর কুকুর ছাড়া
তেমন কাউকে পাওয়া যায় না
আর রঙের মেয়েদের
যদি সত্যি আমি আঁকতে পারতুম
তো দেখিয়ে দিতুম পৃথিবী কীরকম রঙিন
আর এই রঙে কী চিনি
কী বিষ
বুদ্ধ
আমার ত্বকের পাশ দিয়ে হেঁটে যায় দাঁত নখ লোকজন
তিক্ত মনুমেন্ট
নদী
আগ্নেয়গিরি
একটা মেয়ে হাঁটে অন্তর্লীন নৈসর্গিক নম্রতায়
যদিও আমার ঘুম নেই
আর মেয়েটাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি বাতাসে
অম্লআর্দ্রতায়
যেন সারা দুনিয়ায়
ও
আমাকে খুঁজে বেড়ায় বৃষ্টি মাথায়
আর
আমাকে না পায়
আমাদের পাড়ার মেয়ে
কাঠপেনসিল
রংপেনসিল
নীল ধানক্ষেত
লাল ধানক্ষেত
মৃদু লতাপাতা
তীব্র আরণ্যক
তোকে টেনে নিলো
পানের বরজ
খনা ও নবান্ন
উলু ও উলকি
কুয়াশাকুন্ডিতে
নক্ষত্রকুসুম
আলো আর ছায়া
ছায়াসংহিতা
শেয়ালের মাঠ
বাতাসের মাঠ
সিঁদুর পরা পা
জোনাকির ঝোঁপ
হরিৎ আহ্লাদ
নমনীয় কমনীয় রাত
ছাদহীন বাতাসকুসুম
নুনু বিষয়ক কবিতা
নুনু অতি নিরীহ একটা বস্তু
অতি সাধারণ
এতোই সাধারণ আর অরগ্যানিক যে ওর নাম নুনু
আপনি টালি করে দেখুন দুর্ঘটনা এড়িয়ে
আয়ুর্বেদিক কম্পনাঙ্ক সয়ে
আপনার নিজেরও তো একখানা আধখানা নুনু ছিল
আছে
কিছু বিপদাপদ থাকলেও বিশেষত পদ্মায় ইলিশের মৌসুম
বাড়িতে হস্তরেখাবিদের আনাগোনা
আপনি যথারীতি ওটাকে সামলে রেখেছেন
ওর গায়ে কোন আঁচ লাগতে দেননি
ওকে খেতে দিয়েছেন
শুশ্রূষা দিয়েছেন
আর ও গায়েগতরে বড় হয়েছে
আজ এমন অপবাদ কেউ দিতে পারবে না
যে ওটা কোন কাজের না
বা বৈষ্ণব পদাবলী ওর অপছন্দ
যা হোক
পরাবাস্তববাদী না হয়ে কালচারাল ইম্পেরিয়ালিজমের মুখে ঝাঁটা মেরে
এখন আমরা কবিতা লিখবো
যার যার নুনু নিয়ে
আবার বলছি
যার যার নুনু নিয়ে
যার যার নুনুর ওপর বিশ্বাস রেখে
সাবঅল্টার্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে
তারপর তা উপহার দেবো
প্রেমিকাকে
স্ত্রীকে
পরস্ত্রীকে
মানে যার যেখানে সুবিধে আর কি
আর মেইল করবো
বাংলা একাডেমিতে
গণভবনে
ক্যান্টনমেন্টে
আমরা কিন্তু হোয়াইট হাউজেও পাঠাতে পারি
তরতাজা এক নুনুর কবিতা
শিশির আজম
Shishir Azam
জন্ম : ২৭ অক্টোবর, ১৯৭৮
জন্মস্থান, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা :
এলাংগী, কোটচাঁদপুর
ঝিনাইদহ –৭৩৩০
বাংলাদেশ
মুঠোফোন ও হোয়াটসআপ নম্বর : ০১৭১৭৩৮৭৯০৭
ফেসবুক লিংক :
https://www.facebook.com/profile.php?id=100005606135865&mibextid=ZbWKwL
mail : shishir01978@gmail.com
কাব্যগ্রন্থসমূহ :
ছাই (২০০৫)
দেয়ালে লেখা কবিতা (২০০৮)
রাস্তার জোনাকি (২০১৩)
ইবলিস (২০১৭)
চুপ (২০১৭)
মারাঠা মুনমুন আগরবাতি (২০১৮)
মাতাহারি (২০২০)
টি পোয়েট্রি (২০২০)
সরকারি কবিতা (২০২১)
হংকঙের মেয়েরা (২০২২)
আগুন (২০২৪)
বিষ (২০২৪)
চা কফি আর জেনারেল কানেকটিভিটি (২০২৪)
সম্পাদিত ছোটকাগজ : শিকড় (৫ টি সংখ্যা প্রকাশিত)
সম্পাদিত কবিতার ভাঁজকাগজ : বাংলা (৩ টি সংখ্যা প্রকাশিত)
বাংলা কবিতায় Tea Poetry Movement এর উশকানিদাতা