শব্দকুঞ্জ কাশবন সংখ্যা
কবিতার প্রহর
শব্দকুঞ্জ কাশবন সংখ্যা
কবিতার প্রহর
গন্ধটা মোটেও সন্দেহজনক নয়
গোবিন্দ মোদক
এক মিনিট দাঁড়াও
জীবন-পোড়া গন্ধ আসছে
অথচ কোথাও কোনও সম্পর্কের ধোঁয়া নেই
ভাবি- এ এক আশ্চর্য সমাপতন
কার্য ছাড়াই কারণের বাহাদুরি,
কিংবা কারণ ছাড়াই অত্যাশ্চর্য কার্য
তবুও কেউ ঈদের জন্য অপেক্ষা করে
কেউ বা শারদ অবকাশের
অথচ গীর্জায় ঘণ্টাধ্বনি হলে
চোখে ভাসে যিশুর ক্রুশকাঠ
কতগুলো উলঙ্গ বাচ্চা খেলা করে ফুটপাতে
ওরা কিন্তু জীবন-পোড়া গল্পে টের পায় না
শিউলি ঝরার মতো বেজে ওঠে
ওদের অকারণ হাসির খিলখিল শব্দ।
(নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
এসো মৃত্যু
গৌতম তালুকদার
মৃত্যু খুব কাছাকাছি এসেও
বারবার ফিরে যায় ভয় দেখিয়ে।
যার যা কাজ,তাই বলে কি বসে থাকবো।
আসুক না যতো বার মন চায় সং সেজে
মরে তো আছি এ পোড়া দেশে
মারার কি মরে যাবার ভয় থাকে ?
উড়ে যাবেই বক ডানা মেলে
কোনো একদিন অচিনপুরের অজানায়
হয়তো তখন কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি পড়বে।
সভ্য সমাজের কিছু তো দায় থাকেই
বাটোয়ারা হবে সব বাটোয়ারা
কেবলি মৃত্যু করা প্রহরী ভুমিকায়।
এসো মৃত্যু। অকৃপণ দোর খোলা
যমুনা ও উদার। শীতল হতে বাধা নেই।
(যাদবপুর, কলকাতা, ভারত)
হেমন্ত ওহে হেমন্ত
রানা জামান
হেমন্তের ঘ্রাণে ক্ষেতের আলের রেখা এঁকে থাকি
অন্তরে চাঁদের তুলিতে ফুরালে শরৎ
ঘাসের ডগার কিশোর শিশিরে হেমন্তের ভ্রুণ
বৈঠা বেয়ে আসে ধানের শরীরে
সবুজ শীষের সৌন্দর্য চাষীর হৃদয়ে প্রত্যাশা
বারো মাস নিশ্চিন্তের চারা
সোনালি ধানের রঙে সোনা রঙে গ্রাম রেঙ্গে
চিত্রপট করে রাখে দুটো মাস
চাষীর আনন্দ উদয়াস্ত মেতে থাকে পাকা ধানে
সুখের সলতেয় জ্বেলে রাখে আলো
ধানগাছের আঁটির ঝুমুর ধ্বনির ছন্দে ঘ্রাণ মিশে
বাউলের ভিড় জমে মনস্তত্ত্বে
চাতালে আরেক ব্যস্ততা মাড়াই ঘিরে চলে যেনো
পিঠে বোঝা বেশি নেবার ব্যস্ততা পিঁপড়ের
পাখপাখালি অপরূপ ব্যস্ত থাকে ধান চুরি করে
পেট ভরে খেয়ে নিতে প্রতিবারে
আনন্দে বৌ-ঝিরা কুলায় উড়িয়ে ধান থেকে ময়লা
ঝেরে তুলে নেয় মটকা বা ডোলায়
চাঁদের আলোয় সমস্বরে জারি গানের দোলায়
দোলে গৃহবধূ গড়ে পিঠা পুলি
নতুন ধানের পিঠার আস্বাদ পেতে ছুটে যাই
গেরামে অমোঘ আকর্ষণে প্রতি হেমন্তে।
( ঢাকা, বাংলাদেশ)
তুই
অভিষেক ঘোষ
হ্যাঁ রে, তুই কি মুঠোয় ভরে কালবৈশাখী আনিস?
মহানগরীর রাজপথে হোস্ নিওন আলোয় ভ্যানিশ!
তোর ঠোঁটদুখানি কফির কাপে যে চুম্বন এঁকে যায়,
ইকির-মিকির খেলার বয়স তাতেই যে হারায়!
সান্ধ্য হাওয়ায় চুল উড়িয়ে ওই যে অলীক হাসি,
উত্তাল কোনো ঢেউ যেন বলে, হিমশৈলকে ভালোবাসি!
তোর সাথে এই আলাপচারিতা হৃদয়ের শতদলে
মাতিয়ে রেখেছে এ মন-মগজ, স্নিগ্ধ সে পরিমলে।
কাশফুলের গন্ধ
বিকাশকলি পোল্যে
লোকে বলে কাশফুলেতে
গন্ধ নেইতো তেমন
শ্বেতশুভ্র নয়নলোভা
রূপেতে সে যেমন।
গন্ধ আছে কাশফুলেতে
করছে ম ম পুজো
তোমরা যারা পাও না গন্ধ
একটুখানি খুঁজো।
খুঁজলে পাবে কাশের গন্ধ
নও তা হৃদয় ভরে
কাশের গন্ধ না পেলে মা
আসবে কেমন করে!
(গড়িয়া, কলকাতা)
মাকে নিয়ে বাড়ি
আরিফুজ্জামান জুলহাস
মাকে নিয়ে যাচ্ছি বাড়ি,
মা জীবনের চেয়ে দামি!
মাকে সবাই ভালোবাস,
ভালোবাসি মাকে আমি।
মা হলো শ্রেষ্ঠ নেয়ামত,
মা আমার আলো!
মাকে যদি ভালোবাস,
জীবন তোমার ভালো।
মায়ের জন্য এই দুনিয়া,
দেখছো তুমি ভাই!
সেই মাকে ভুলে যেওনা,
জড়িয়ে রাখ তাই।
মায়ের দোয়া কবুল করে,
স্বংয় স্রষ্টা রব!
মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত,
কুরআনে আছে সব।
মায়ের ভালোবাসা নির্ভেজাল,
মা জীবন আলো!
সুখের স্বর্গ পরকালে মায়ের জন্য,
থাকবো সুখে ভালো।
এই কবিতাটি ঢাকা থেকে গাড়িতে
যাওয়ার সময় গাড়িতে লেখা।