শব্দকুঞ্জ বৈশাখী সংখ্যা
তানবীর সজিব এর একগুচ্ছ কবিতা

তানবীর সজিব এর একগুচ্ছ কবিতা
রক্তজবার শোক
এ পৃথিবী যাদের নিকট ঊষর লাগে
যারা হাঁটে পৃথিবীর পথ নত শিরে
প্রান্তে মেলে চোখ—
যারা কেবলই দেখতে পায় রক্তজবার শোক।
যতই এঁকেবেঁকে নামুক মাটির কলসের জল
পাবেনা কোনো ফল —
একবার যার নদীর সঙ্গে ঘটেছে বিয়োগ ।
কিছু গাছ আছে বড় অভিমানী
চিমটি দিলে রক্ত ঝরে অভিমানে —
সান্ত্বনা না পেয়ে শেষে
মুখ লুকিয়েছে গগণপানে।
শেষমেশ—
যতই থাকুক না কেন জল, আলত ছোঁয়ায়
লজ্জাবতী অবনত হতে করে না কখনো ছল।
প্রতিধ্বনিত রণ
আমরা যারা ভাঙি ঘর
অন্যকে করে অচল
ভুলে যায় যারা
ভাঙনের মুখেও পড়ে তারা
কোনো এককাল—
যারা ভাবে দুঃখ কালের বুঝি নাই শেষ
আর যারা ভাবে রাত পেরুলেই দুঃখ নিঃশেষ
দুঃখকে কি আসলে এড়াতে পেরেছে
কখনো মহাকাল?
মনের ভিতর কান পেতে শোনো
তোমার ন্যায় অন্যায় যতো, প্রতিধ্বনিত হয় সে রণ এখনো।
দুর্ভাগ্যের পুনরাবৃত্তি
মুগ্ধতার পুনরাবৃত্তি
আমায়
মনে করিয়ে দেয়
আমারই
দুর্ভাগ্যের পুরাতন দিন
শেষমেশ
বন্ধ দমে গন্ধ ভুলি
রজনীগন্ধার ফুল।
স্থিরতার অভাবে
স্থিরতা কবে আসবে বলো তো?
অস্থায়ী হাওয়া দীর্ঘ লাগে বুকে
কোথাও কি নেই স্নিগ্ধতা এতোটুকু
শান্ত দীঘল নদীর জল ?
আঘাত ছাড়া —
আধারে ঘনীভূত হলেও তো পৃথিবী
স্থিরতা জানান দেয় নক্ষত্রের চোখে
যদিওবা তা অনেক দূরে—মানুষ কী
তবে আরো দূরে?
দুঃখের অনুরূপকে
দুঃখের অন্তরাল পেড়িয়ে
সুখের সন্ধানে
দুঃখ হয়ে ওঠে আরো দগদগে ক্ষত
মনে দুঃখের আঘাত হানিলে —
কে প্রথম অনুভব করে ভারখানি তার ?
মা?
আব্বা?
নাকি সৃষ্টা সমান ব্যথিত চিত্ত নিয়ে
দূরে কোনো এক বনে—জঙ্গলে
একটি গাছের বাঁকলে গেঁথে রাখেন
প্রতিটি দুঃখের দাগ
এখন আমার সারা দিন-রাত কাটে
খুঁজে খুঁজে মনে
কোন গাছ হয়
আমার দুঃখে সবচেয়ে বেশি দাগি বনে—