Blog

মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচ্ছ কবিতা

সুলোচনা শৈশব

রাত তিনটে বা চারটেয় নিজ হাতে চা করে খাওয়ার
মজাই আলাদা। রাত যত গভীর হয় রাত্রির সাথে মিতালিটাও তত প্রগাঢ় হয়।

কোনো কোনো দিন চোখ বেশ জ্বালা করে, বুকও! তবু নিজেকে মেলে ধরার এ এক আশ্চর্য সময়! মানুষ কতকিছু করে কত এলেবেলে ভুং ভাং খায় – আর আমি শব্দ নিঙড়ে রাতের মাধুকরী পান করি – চেখে নিই আরক আরক্তিম আঁধার। মাঝে মাঝে বৃষ্টি আসে। বৃষ্টির গন্ধটা   গভীরতর, সুনীল সুনীল..!

চন্দ্রমল্লিকার সাথে দেখা নেই কতোকাল! অথচ, তার ভেজা ভেজা চোখ, নগ্ন শরীর, রাঢ়িখাল আহৃত গন্ধকের ন্যায় মন্দ্রক… মধুবন্তী…!

চড়ক পূজা কিংবা চৈত্র সংক্রান্তির ঢোল কি বাজে না আজকাল! আমের বউলের গন্ধ আসছে বৈশাখী ঝড়ের বাতাসে! ফিরে ফিরে কানে বাজছে মেলার বাঁশি, পুতুল নাচের ইতিকথা!
সুলোচনা শৈশব কি পাব ফিরে আর কোনো দিন…!
১২/০৪/২০২৫.

তীরে ফেরার আগেই

যাদের যাদের নিয়ে আমি যাচ্ছিলাম তারা মূলত
পরিব্রাজক ছিল। জীবনকে ভোগ করার একটা অদম্য বাসনা তাদের মনে উচ্ছ্বাস তৈরি করেছিল। আর সেই উচ্ছ্বাসই ঝরে পড়ছিল তাদের গানে কিংবা স্বপ্নে দেখা পরিযায়ী পাখির পাখনায়। আমি তাদের সাথে ছিলাম যতটা না তারচে’ বেশি পিছিয়ে পড়লাম অনলস উপেক্ষায়। একসময় সেই গানগুলোই বেদনায় অথবা কান্নায় রূপান্তরিত হয়ে যায়। পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা হয়তো আমরা কেউ ঠাহর করি না বা করার সুযোগ হয়ে ওঠে না মূলত।

আমরা আসলে কোথায় যাচ্ছিলাম তা ঠিক করার আগেই হাঁটা শুরু করেছিলাম। ফলে ঘন ঝোঁপের আড়ালে অযাচিত সুড়ঙ্গের মুখে এসে পড়লাম। ফলে চারদিকে অবোধ শূন্যতা নেমে এলে যেমন দেখায় তেমনই এক বিস্ময়কর নৈঃশব্দ্য রচিত ঝড়ের মুখোমুখি পড়ে যেতে হয়…

নি:শব্দ ও নিরুপদ্রব হতে পারত যা -তাই–
একসময়  আমাদের অপরিনামদর্শী পথরেখায় ফুটে ওঠল আর আমরা দিকচিহ্নহীন ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যেতে থাকলাম – যেভাবে হারিয়ে যায় ঝড় কবলিত কোনো জাহাজ তীরে ফেরার আগেই…!