You are currently viewing শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। আহমেদ শিপলু’র ‍গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা। আহমেদ শিপলু’র ‍গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা

আহমেদ শিপলু’র গুচ্ছ কবিতা

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা

আহমেদ শিপলু’র গুচ্ছ কবিতা

বনলতার পোস্টমর্টেম

 

অন্ধকার পেরিয়ে মুখোমুখি নয় বসাবসি

শিশিরের শব্দ পেরিয়ে বায়বীয় কনসার্ট

যেহেতু সব পাখি ঘরে ফেরে না

সব নদীর শেষ হয় না লেনদেন

 

আলো থাকে তবু চোখের সমুখে

দূরবর্তী আলাপে পেরোই হাজার বছর

জমাট লাল বুকে নিয়ে ফাগুন আসে, কেবল আসে না সেই বনলতা সেন।

 

টেবিলের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন

তাঁর ঠিকানা নাটোরে কি না এবং

 

সত্যিই তিনি নারী কিংবা দেহপসারিণী

যাচাইয়ের ক্লাসে সকলের হাতে সার্জিক্যাল নাইফ!

চুল তার সত্যিই অন্ধকার?

বিদিশার অনুদঘাটিত রহস্য তালাশে হয়রান!

 

অশোকের পদচ্ছাপ মিলিয়ে গেছে সেই কবেকার আখ্যান-আসরে

ধুষর হতে থাকা বিকেল বোঝে না মানুষ

ছিলাম না কোথাও

ব্যবচ্ছেদ-আসর ছেড়ে পথে নামি

পাঁচ আঙুল পকেটে হাঁটি।

পোড়ামাটির ইতিহাস ছুঁয়ে বুকের ভেতর হারানো অতীতকথা

সেখানে যার বাড়ি

নাম তাঁর বনলতা।

 

২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

 

অবশিষ্ট থাকে ফুটপাত আর উদ্যান

 

বুনোচাঁদ ফেরে না আর। মানুষ বনে বেড়াতে যায়। জলবর্তী যাপন যেখানে, সেখানে মস্তফাঁকা। ডানার স্বাধীনতা আঁকে মেঘ ও শূন্যতা। মাস্তুলে রোদ আর দূরবর্তী জীবনের ডাক। কবিকে আটকে ফেলা হয়েছে ভিখিরি কলঙ্কে। যেহেতু অঙ্কে কাঁচা হলে ফুটপাত আর উদ্যান অবশিষ্ট থাকে। কোথাও কি অপেক্ষা করছে কেউ? কোনো কাঁধ কিংবা বুক। বহুকাল নিরাশ্রয় দেহ। সত্য চেটেপুটে অবশেষে আঙুল মিথ্যা মনে হয়। অথচ টিপসই মিথ্যা নয়। বনমোরগের ডাক হয়তো বিস্মৃতপ্রায়। আমাদের যৌথ করতল মর্দন শেষে আর কোনো কুশল জিজ্ঞাসা নেই। ‘অঙ্কে কাঁচা হলে ফুটপাত আর উদ্যান অবশিষ্ট থাকে’ এই জেনে— বুনোজ্যোৎস্নার অপেক্ষা রপ্ত করে কবি।

 

১০ জানুয়ারি ২০২৪

 

আমি এবং ঝড় যখন মুখোমুখি

 

কোথাও অপেক্ষা করছে কেউ। জানি না তার শুরু কোথায়। নদী। যে প্রতিদিন অচেনা হয়। রাস্তা অথবা বৃক্ষ। সবই বদলায়। ঘাট এবং স্টেশন অতোটা নয়। যাত্রীদের তাড়াহুড়ো বদলায় না, যাত্রী বদলায় শুধু।

 

কোথাও শুরু ছিলো, কোথাও শেষ থাকবে। আমিই বর্তমান! তবে আর ভাবনা কেন! যেখানে আমিহীন সরগরম। প্লাটফর্মজুড়ে ব্যস্ততা।

 

সকল সৈকতেই রৌদ্র নামে, ঢেউয়ের সাথে স্নানের উৎসব হয়। সুতরাং আমি অতোটা কেউ নই। যেভাবে ভাবতে শুরু করেছিলাম।

 

জানি না কোথায় অপেক্ষা করছে শুরু। ঝড় যদি বর্তমান, তবে ঝড়ের অতীত আলোচ্য নয়। আমি এবং ঝড় যেহেতু মুখোমুখি, সুতরাং ঝড়ের ভবিষ্যৎ কেন জানতে চাইবো। নদীর অথবা মেঘের এবং ফুলের যেহেতু ইন্সুইরেন্স নেই! পাগলের তবে কেন! এসব ভাবার জন্য ঝড়ের কাছে অবসর প্রার্থনা জানাতে পারি! নিশ্চয় কোথাও আমার শুরু অপেক্ষা করে আছে।

 

৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

 

আহমেদ শিপলুর জন্ম ১৯৭৬ সালের ১৭ জুন।

তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো হলো: বসন্তের অপেক্ষায় (১৯৯৯), কোথাও তুমি নেই (২০০১), ক্রাচে ভর দেয়া যৌবন (২০০৫), মন পাখিটার ডানা কাটা উড়তে মানা (২০০৯), নির্বাচিত কবিতা (২০১৩), বালিকার আকাশ (২০১৫), প্রজাপতিরা ফিরে গিয়েছিলো (২০১৭), বিষণ্ন ইস্পাত (২০১৮), বিষবৃক্ষের উল্লাস (২০১৮)।

 

সম্পাদনা: কাব্যকল্প (আবৃত্তির ক্লাসের জন্য সম্পাদিত গ্রন্থ২০১৮), আবৃত্তির শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১৮); নন্দিতা (শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির পত্রিকা)।

আহমেদ শিপলু
কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী

Leave a Reply