শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা-২০২৪। অণুগল্প: বিধাতা অন্তর্জামী-প্রদীপ দে

Spread the love

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা-২০২৪

অণুগল্প: বিধাতা অন্তর্যামী

প্রদীপ দে

শব্দকুঞ্জ ঈদসংখ্যা-২০২৪

অণুগল্প

বিধাতা অন্তর্যামী

প্রদীপ দে

 

দুপুর কি নিশুতি রাতের চেহারা নেয়। আষাঢ় শেষ না হয়েই সেই ভয়ংকর কালো মেঘ হুঙ্কার দিয়ে উঠলো আজ। বজ্রপাতে খানখান করে দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে তুললো তার বজ্রধ্বনি। বৃষ্টির ফোঁটা দিয়ে যার শুরু সেই ফোঁটা প্রবল রূপে সজোরে  মাটিতে আছড়ে পড়তে বেশি সময় নিল না। আর কাল হল সেখানেই।  রহমানের জ্বলে যাওয়া কাঠামোর পক্ষে ওইটাই যথেষ্ট ছিল।

 

করোনা ভাইরাসের প্রভাব সামান্য কমেছিল। রহমান সকালে নাস্তা সেরে মাঠে হাল ধরেছিল।  রোজের মতোই। ফরেমা বিবি ভেবে ছিল আজ আর সে মাঠে দুপুরের খাবার নিয়ে যাবে না। তাই ছেলে আতাউরকেই পাঠিয়েছিল মাঠে টিফিন বাক্স হাতে।  তখনও ঘর্মাক্ত রোদ গা জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। কে জানে মিনিটের মধ্যেই আকাশ তার মূর্তি  বদল করে নেবে। এত হিংস্র হয়ে উঠবে। আল্লাহ বোধহয় সব জানে। সেই পারে এর উত্তর দিতে!

 

ফেরার সুযোগের দূর অস্ত। ছেলে আতাউর টিফিন বাক্স নিয়ে মাঠের প্রান্তে পৌঁছেও গেছিল। তাকে হাত ধরে সজোরে টেনে নিল আয়েশা, তাদের মাঠের প্রান্তে বেড়ার কুটিরে। নইলে ছেলেটা যে মারা যাবে!

 

আর বেড়ার জানালা দিয়ে আতাউর চাক্ষুষ উপলব্ধি করলো তার বাপজানের সলিল সমাধি।

আকাশ থেকে নেমে আসা অগ্নিকুন্ড তার বাপকে কোন সুযোগই দিল না আত্মরক্ষার। প্রচন্ড আওয়াজে কেঁপে উঠলো ধরনী। বালক আতাউর বেগে ঘর থেকে বেড়োতে চাইল,কিন্তু আয়েশার পরিবার তাকে আঁটকে দিল। ক্ষেতে জলপ্লাবনে তার বাপজানের দেহটাকে ভাসিয়ে নিয়ে চললো,  হয়তো আতাউরকে শান্ত করতে তার বাপের চিতায় জল ঢেলে। আতাউর কিছু জানে না সে শুধু দেখেছে কেউ মারা গেলে তাকে মাটির তলায় কবর দেওয়াই হয়! এ নিয়ম কেন পাল্টে গেল? অবাক বালক আতাউর এ প্রশ্নের উত্তর পেল না। তাকে কেউই এর উত্তর দিতে পারেনি।

 

আল্লাহ -ই জানে এ প্রশ্নের উত্তর!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top