শব্দকুঞ্জ স্মৃতিময় আষাঢ় সংখ্যা। মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচ্ছ কবিতা

মোহাম্মদ হোসাইন এর একগুচছ
কবিতা

বৃষ্টির অক্ষর

বৃষ্টির অক্ষর লিখে নিচ্ছে গাছ 

এখন চিকচিক সবুজ সবুজ আলো ছড়াচ্ছে

আমি তার কোমলতা পান করি

পুরনো চিঠির ভেতর বৃষ্টির গন্ধ 

সেই গন্ধ কদম ফুল হয়ে ফুটে থাকে আমাদের অভাবী হাড়ির ভেতর 

আমরা তখন ক্ষুধার তীব্রতায় স্মৃতি খুঁটে খাই

আমাদের এখানে আজকাল আর সন্ধ্যামালতি ফুটে না 

সন্ধ্যা নিজেই ঝিয়ের কাজ করে অন্যের সীমানায় 

একদিন রক্ত হিম করা কান্না আসবে আমাদের  বাড়িতে। সেদিন হয়তো আমরা খুব আপ্লুত হব 

সেদিন হয়তো আমরাও বৃষ্টি নামাব পুরো আকাশ জুড়ে 

আমাদের মৃত আবেগ আবার জোড়া দিতে দিতে 

গান গাইব কবরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে…কেননা 

শ্রাবণ কে আমরা খুব ভালোবাসি 

সেই ভালোবাসা তীব্র গন্ধ ছড়াবে হাস্নুহেনা ফুলের আবহে…!

০১জুলাই ২০২৫। 

মিশ্ররাগ

মেঘের মতো আমার হাত মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে

দিনকে দিন 

সমস্ত অন্ধকার ধরে নিয়ে গুঁজে রাখছি তোমার খোঁপায় বেলীফুল করে ভোরের
আলোয়। তুমি টের পাচ্ছ না। ময়ূর নাচছে বৃষ্টির ফোঁটায়, নাকফুলও…

বুদবুদ ওঠছে বুক পোড়ানো পঙক্তির, মানুষ হা হা দিচ্ছে 

যাকিছু ফেলনা, যাকিছু ছইয়ের ভিতর, ছাইয়ের ভিতর 

পুঁতে রাখছি – একদিন আগুন হয়ে জ্বালামুখ হয়ে বেরিয়ে আসবে, আসবেই…

বৃষ্টি কিংবা বিরিশিরি নদী, চমস্কি কিংবা চনমনে রাত

খুন হয়ে গেলে আবার ফালি ফালি চাঁদ আবার ফালি ফালি তীরের ফলা জাগবে,
জাগাবেই..!

ক্ষয় নেই, কোনো কিছুরই ক্ষয় নেই… শুধু আপাত বাহ্যরূপ, আপাত ক্ষণিকের
মুন্ডুলা মিশ্ররাগ! 

০৬/০৬/২০২৫

ক্যামোফ্লেজ 

গেঁথে গেল বুকে

সে কি পেরেক, না জোছনার ছুরি বুঝতে পারিনি!  

জনমভর আলোটাই চেয়েছিলাম নিতে 

অথচ, অন্ধকারও ওঠে এলো হাতে

এখন দেখি মাঝরাত্তিরে করতলে মুখ দেখা যায়। 

কখনো কখনো চাঁদও বেশ কায়দা করে চোখ মেরে চায়, ভাবি আবিলতা — পরে দেখি
নিজের ছায়া ক্যামোফ্লেজ হয়ে আছে…!