Elementor #2590

Spread the love

শব্দকুঞ্জ স্মৃতিময় আষাঢ় সংখ্যা
কবিতার প্রহর

শব্দকুঞ্জ স্মৃতিময় আষাঢ় সংখ্যা

কবিতার প্রহর

কদমের গাত্র বেয়ে বৃষ্টির শিহরণ
রানা জামান

কদমের খোঁজে বৃষ্টির সখ্যতা মেনে এক শা
শুকনোয়
 পদ্মও পাওয়া যায় বেশুমার
বৃষ্টিস্নাত
 কদমে তোমার উচ্ছলতা
হার
 মানে ভারতনাট্যম রত মোনালিসা

তোমার
 পেলব অবয়ব বাঙ্ময় অশেষ
কদমের
 প্রতি সরু ফুলের গ্রিবায়
নিটোল
 পাপড়ির ভেজা দেহ ঘিরে
পানকৌড়ির
 পুচ্ছ আঁকে অব্যক্ত প্রেমাণু

কদমের
 গাত্র বেয়ে বৃষ্টিরেণু কী যে শিহরণ
বোধের
 শরতে ফুটায় শাপলার ক্যাফেইন
শীৎকারের
 চরমে পৌঁছে জিভ বিন্দু
বৃষ্টি
 পেয়ে উচ্ছ্বসিত অন্তস্রোত সমুদ্রের

বৃষ্টির
 মৌসুম আমাকে নাড়িয়ে রাখে বেশ
অন্য
 সব ঋতু বিরহের ডিঙি বেয়ে চলে
তেতো
 মুখে পারাপার হই প্রয়োজনে
অগত্যা
 মহেষ কবিরাজ বিশুষ্ক কদম।

 

 

বৃষ্টি আসছে যে!

গোবিন্দ মোদক

 

জানলার কাঁচে জলদাগ 

বকুলগাছের পাতা থেকে 

      পতনোন্মুখ জলবিন্দু

তারকাঁটায় শিশিরফোঁটা

দেহাতি প্রৌঢ়ার নাকের নথে চিকচিক ঘাম

দূরাগত বৃষ্টির স্মৃতিমেদুর শব্দ 

সব মিলেমিশে কবির খাতা জমজমাট 

অথচ তখন একজন কৃষকের ঘাম ঝরছে

ঠেলাওয়ালা তার চূড়ান্ত প্রচেষ্টা জারী রাখছে

খামারে ফসলের কাজে মেজোবউ সেজোবউ

কচিকাঁচারাও হাত লাগিয়েছে …

       বৃষ্টি আসছে যে!

কবির ঘরে অন্নের অভাব নেই 

শুধু অন্যের অনুভূতিকে লেখার স্বভাব।

 

প্রথম আষাঢ়ের কদম
পংকজ পাল

এক.

সীমাহীন ভালোবাসার দেয়াল ভেঙ্গে
দু’হাতে স্বপ্নগুলো আড়াল করে
বুকের ভেতরে বেদনার ইন্দিবরে
চঞ্চল ভ্রমরার ইচ্ছেগুলোকে বিসর্জন দিয়ে—
ভালোবাসার ডুব সাঁতারে হারিয়ে যাওয়া পদচিহ্নে
আঁকলে সুখ আল্পনা ৷

সত্যের মুখোমুখি এসে দাঁড়াও একবার
যদি করো প্রশ্নটা নিজেকে
তাহলে দেখবে—
মনে বইছে এখনো মাতাল ঝড়ো হাওয়া
লাগাম ছাড়া ভাবনাগুলো
এলোমেলো করে দিবে সব ৷

অতীতের পান্ডুলিপির রঙহীন পৃষ্ঠায়
লিখা আছে বিদায়ের করুন কাহিনী ৷
অথচ এই পান্ডুলিপিতে তুমি লিখেছিলে—
তোমার আমার নাম ৷
আমাদের অনবদ্য প্রেম কাব্য,
অগনিত নির্ঘুম রাতের গল্প ৷
আরো আছে ভাঙ্গাচোরা বিবর্ণ অতীত কথা
নিঃসঙ্গ মেঘডাকা সন্ধ্যায় একাকি
প্রতীক্ষার কথা ৷
বিশ্বাসটা আঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে চলার কথা
আর অন্তরে জমে থাকা না বলা কথা ৷

আষাঢ় প্রথমদিনে কদম হাতে নিয়ে বলতে—
”ভালোবাসা নির্ভর করে—পারষ্পারিক শ্রদ্ধাবোধে,
শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে সম্পর্কের রং ফিকে হয় ৷”
কদম ফুল স্পর্শ করে তুমি বলতে—
ছেড়ে যাবে না আমায় কোনদিন ৷

দুই.

ভারী হওয়া বাতাসে বেদনার দীর্ঘশ্বাসে
হয়নি বলা শেষ কথাটি ৷
তবুও স্বপ্ন হুইসেল বাজিয়ে—
আগামীর পথে ছুটে যাওয়া সময়ে
দুয়ারে আসে আবারো আষাঢ় প্রথম দিন ৷

এই দিনে তোমাকে দিতেই হতো প্রিয় কদম,
এখনো শ্রদ্ধাবোধে কদম ভরা হাতেই
দাঁড়িয়ে থাকি আমি ৷

আমার মলিন মুখের পানে তাকিয়ে
হাতটা বাড়িয়ে নিবে কি প্রিয় কদম ?

সময়ের বিবর্তনে—
আষাঢ়ের প্রথম দিনটা চলে যায় ;
স্বপ্নগুলো উড়ে যায়, স্মৃতিগুলো থেকে যায়
নিঃসঙ্গ সময়ের প্লাটফর্মে
অস্থির সময়টা গ্রাস করে আমাকে
বেঁচে থাকার রং হয় ফ্যাকাশে ৷
জীবনের স্বপ্নটুকু চুরি হয় প্রতিদিন
ফেরা হয় না তোমার কাছে ৷

মনে পড়ে যায়—
কদম হাতে নিয়ে দুর্বার আর্কষনে
অজস্রকাল তোমার পানেই শুধু ছুটেছি
তবুও হয়নি ফেরা তোমারই কাছে ৷

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top