Blog

শিশির আজম এর একগুচ্ছ কবিতা

রেমব্রাঁ

বিকেলের দিকে আমি হাঁটতে বেরোই

কারণ তখন আলো যায় যায়

আর আঁধার আসি আসি অবস্থা

এসময় হাঁটতে বেরিয়ে

সহজে ফেরা যায়

নিজের বাড়িতে

কোনটা নিজের বাড়ি

এটা ঠিকঠাক চিনতে পারাও চাট্টিখানি কথা না

রেমব্রাঁ তো বিভ্রান্তই থেকে গেলেন

মরা লোকদের কে চিকিৎসা দেবে?

বন্ধুরা চেয়েছিল আমাকে আরও কিছুদিন

বাঁচিয়ে রাখতে।

‘অসম্ভব’ —

নার্স বললো।

‘মিরাকল কিছু ঘটতে হবে’ —

ডাক্তার অনর্থক আশা দেখায়নি।

যা হোক কেন আমাকে বেঁচে থাকতে হবে

এর সদুত্তর কেউ দেয়নি

না নার্স

না ডাক্তার।

আর এরা হয় তো জানেই না

গা-ছমছম ইহুদি কুঠুরিগুলো

আর যতসব মরা লোকজন

হাসপাতালে এসে কেন বিরক্ত করে।

ভ্যান গঘের চেয়ারের ওপর পাইপটা কে রেখে গেছে

ভ্যান গঘের চেয়ারটার সামনে

আজ

এই ২০২৪-এর আগস্টে

আবার

থমকে দাঁড়ালাম

চেয়ারের ওপর বিশেষ আকৃতির একটা পাইপ

যেরকমটা শোভা পেতো

শেখ মুজিবের ঠোঁটে

তামাক পান করবার জন্য

ওটা

ঐ পাইপ

সদম্ভে হেলান দিয়ে আছে

চেয়ারের ওপর

অতি সাধারণ চেয়ারের ওপর

কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে

আর বসবার ঐ ছোট্ট জায়গাটা

এখন

বিশাল এক ল্যান্ডস্কেপ

প্রশ্ন করো

পাইপটা কে রেখে গেল

Salt Poetry

আজ অব্দি এমন কোন কবিতা আমি লিখিনি

যাতে নুন দেয়া আছে

নুন মানে নুন

আর আপনি জানেন নুন খেয়ে কেউ নিমকহারামি করে না

(কবিতায় আমি নুন দিই। কিন্তু তার পরিমাণটা এমন

আর কবিতার অন্যান্য অনুসঙ্গে

তার সংশ্লেষণ এমন

যে পাঠক তাকে আলাদাভাবে সনাক্ত করবার কথা ভাবেন না।)

ফলে আমার কবিতার গ্রাহকসংখ্যা কম

নুন আপনার পছন্দ

নুন আমারও পছন্দ

হ্যা এমন একটা কবিতা এবার আমাকে লিখতে হবে

যাতে যথেষ্ট পরিমাণে নুন দেয়া থাকবে

যথেষ্ট

যথেষ্ট

নুন

যেন বাংলা একাডেমির জিভ পুড়ে যায়

পহেলা বৈশাখের টেবিল

টেবিলটা তিনদিন খায়নি, বিশ্রামও পায়নি। আজ পহেলা বৈশাখ

আজ ও কথা বলবে, ঘোরাফেরা করবে

পুরনো ডাকটিকিটটা আড়াল করে

যেটা গতবছর হারিয়ে গিয়েছিল, সম্ভবত নতুন কেটে রাখা

গাছের তাজা কোন গুড়ির নিচে।

কিন্তু ওর দেহের ত্বকের ভেতর থেকে ভেসে ভেসে উঠছে

চিত্রবিচিত্র

সুডৌল

তীক্ষ্ণ

একেকটা রেখা, অনেকানেক রেখা।

এরা

এই রেখাগুলো

এরা তো মারাত্মক সেন্সুয়াল, না কি এন্টিক্লাসিক!